
পর্বত সহ ভূমি স্থান পরিবর্তন করে। সাধারনত পর্বতগুলোর দিকে তাকালে অনুভুত হয় যেন এরা স্থির ও অবিচল। হাজার হাজার বছর ধরে যেন অটল রয়েছে এক স্থানে আসলে কি সত্য? প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটি তা নয়।আসলে প্রতিনিয়তই পর্বতমালা রয়েছে সচল, গতিশ

”পৃথিবীর উপরিস্তর যাকে Geological ভাষায়
প্রকাশ করা হয় (Crust) বা ঝুটিঁ হিসেবে।, যার উপরে পর্বতসমূহ অবস্থিত, সে
স্তরের (Crust) নড়াচড়াই পর্বতমালার গতিশীলতার কারণ । নীচে অধিকতর পুর
আরেকটি স্তর রয়েছে যাকে বলা হয় ম্যান্টল ; ম্যান্টলের উপরে ভাসমান রয়েছে এই
উপরিস্তরটি(Crust)। যেমন পানির উপরে বরফ।” M. J. Selby, Earth’s Changing Surface, (Oxford: Clarendon Press: 1985),
এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ, যখন
জার্মান বিজ্ঞানী Alfred Wegner ইতিহাসে সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেন যে প্রথম
যখন পৃথিবীর সৃষ্টি হয়, মহাদেশগুলো একত্রে সংযুক্ত অবস্থায় ছিল। অর্থাৎ
এশিয়া, আমেরিকা, রাশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ সমস্ত উপমহাদেশ একই স্থলে
সংযুক্ত ছিল। কিন্তু এরপর এরা ভেসে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায় ধীরে ধীরে কয়েক
কোটি বছর সময় নিয়ে আমদের এসব মহাদেশ উপমহাদেশ ইন্চি ইন্চি স্থান পরিবর্তন
করে পরস্পর হতে পৃথক হয়ে গেছে এবং এই শতাব্দির দ্বার প্রান্তে এসে আমরা
দেখি একেকটি মহাদেশ আরেকটি হতে হাজার হাজার কিলোমিটার দুরে সরে গেছে যা
ঘটতে সময় নিয়েছে কোটি বছরেরও বেশি।
বিস্তারিত আলোচনা-
Pangaea বিভক্তির পর আর্বিভূত এ
মহাদেশগুলো ভূপৃষ্ঠের উপর অবিরাম সরে যাচ্ছে প্রতি বছরে কয়েক সেন্টিমিটার
করে। ইতিমধ্যে পৃথিবীর স্থলভাগ আর সমুদ্রের অনুপাতও বদলে গিয়েছে।বিংশ
শতাব্দীর গোঁড়ার দিকে চালানো গবেষণায় উদঘাটিত ভূপৃষ্ঠের কঠিন আবরণ ক্রাস্ট
এর নড়াচড়া বিজ্ঞানীগণ নিম্নরূপে ব্যাখ্যা করেনঃ

ভূতত্ব গবেষনার জন্য প্রায় প্রতিটি
বিশ্ববিদ্যালয় ‘The Earth’ নামক বইটি ব্যবহার করা হয়। Dr Frank Press যিনি
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের উপদেশমন্ডলীর মধ্যে অন্যতম তিনি
বলেন-পর্বতের অত্যন্ত গভীর শিকর রয়েছে পৃথিবীর অভ্যন্তরে। সত্যিকার অর্থে
পর্বত একটি ভাষমান বরফের মতো যার ৯০% থাকে পানির নীচে ও ১০% থাকে উপরে। Frank Press, and Raymond Siever, Earth, 3rd ed. (San Francisco: W. H. Freeman & Company, 1982).

ভূতত্ববিদগনের তথ্যানুসারে, যে ভারী ভারী
বড় প্লেটগুলো পৃথিবীর উপরের শক্ত স্তর সৃষ্টি করে, সেগুলোর নড়াচড়া আর
সংঘর্ষের ফলেই উৎপত্তি ঘটে পর্বতমালাসমূহের। দুটি প্লেট যখন পরস্পর ধাক্কা
খায় তখন শক্তিশালী প্লেটটি অন্য প্লেটের নীচে গড়িয়ে চলে যায়, তখন উপরের
প্লেটটি বেঁকে গিয়ে পর্বত ও উঁচু উচুঁ জায়গার জন্ম দেয়। নিম্নের স্তরটি
ভূমির নীচে অগ্রসর হয়ে ভেতরের দিকে এক গভীর প্রসারণের জন্ম দেয়। এর মানে
পর্বতের রয়েছে দুটো অংশ, উপরে সবার জন্য দর্শনযোগ্য একটি অংশ যেমন থাকে,
তেমনি নীচের দিকে গভীরে এর সমপরিমাণ বিস্তৃতি রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আধুনিক
ভূ-বিজ্ঞানের প্রাপ্ত তথ্যসমূহের মাধ্যমে কেবলি সেদিন এ বিষয়টি প্রকাশ পেল।
ভূ-পৃষ্ঠের উপরের অংশ বা ক্রাস্ট অবিরাম গতিশীল প্লেট নিয়ে গঠিত।
পর্বতগুলোর দৃঢ়ভাবে ধরে রাখার বৈশিষ্ট্যটিই ভূপৃষ্ঠের উপরের স্তরকে ধরে
রাখে ,কম্পন প্রতিরোধ করে অনেকাংশে। অথচ এই ক্রাস্টের রয়েছে গতিশীল গঠন।
বিজ্ঞানের বইগুলোতে পাহাড়ের গঠন বর্ণিত হয়েছে নিম্নরূপেঃ
মহাদেশগুলোর যে অঞ্চলসমূহ পুরু, যেখানে সারি সারি পর্বতমালা রয়েছে,
সেস্থানে ভূ-পৃষ্ঠের শক্তস্তর বা ক্রাস্ট ম্যান্টলের ভেতরে গভীরে ঢুকে যায়।
যদিও তা চলমান। Powers of Nature, (Washington D.C.: National Geographic Society: 1978), 12-13.কুরআনে ১৪৩০ বছর আগেই উল্লেখ করা হয়েছে?-

027.088 وَتَرَى الْجِبَالَ تَحْسَبُهَا جَامِدَةً وَهِيَ تَمُرُّ مَرَّ السَّحَابِ صُنْعَ اللَّهِ الَّذِي أَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ إِنَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَفْعَلُونَ
027.088 Thou seest the mountains and thinkest them firmly fixed: but they shall pass away as the clouds pass away: (such is) the artistry of Allah, who disposes of all things in perfect order: for he is well acquainted with all that ye do.
আর তুমি পর্বতসমূহকে দেখে অটল-অচল মনে কর, অথচ এগুলো সেদিন মেঘরাশির ন্যায়চলমান হবে। এ হল আল্লাহর সৃষ্টি নৈপুণ্য, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুষম-সুসংহত। তোমরা যা কিছু করছ, তিনি তা সম্যক অবগত আছেন।(কোরআন, ২৭: ৮৮)
আল্লাহ তাআলা ব্যতীত তিনি আর কে হতে পারেন, যিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর কুরআন মাজিদে এই তথ্য অবতীর্ণ করেছেন?
0 comments:
Post a Comment